Thursday, May 13, 2010

Part-2 SHOUROBER KOSHTO-2

তারপর আমি শাহনাজকে পার্কের এক কোনায় নিয়ে বেঞ্চে বসিয়ে বলি,তুমি একটু মাথা ঠাণ্ডা করে এখানে বসো,আমি কিছু খাবার আর ড্রিঙ্ক নিয়ে আসছি।তুমি কি খাইবা বল?

শাহনাজ বলছে,আমার ভাল্লাগছে না,আমি কিছুই খাব না,আমি বাসায় চলে যাচ্ছি বলে দাঁড়িয়ে বলছে থ্যাঙ্কস ফর এভেরিথিং।আমি তোমার কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব এবং আজকের দিন কোন দিন ভুলব না।আমি বললাম, ঠিক আছে চলো,আমি তোমায় পৌছে দিয়ে আসি।

শাহনাজ বলছে লাগবে না,আমি রোজ একা আসি,একা যাই,আজও যেতে পারবো।

আমি বললাম,আজকের পরিস্থিতি একটু ভিন্ন,তোমাকে একা দেখে নেহা তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আক্রমণ করতে পারে। শাহনাজ উত্তরে বলছে,ভালো কথা,কিন্তু এইভাবে তুমি আমাকে কয়দিন প্রটেকশন দিবা?তুমি তো আর সারা জীবান আমার সাথে থাকবা না!!! আজ হয়ত তোমার সাথে চলে গেলাম,কিন্তু কাল থেকে তো আবার একাই যেতে হবে, ঠিক না?আমি বললাম,দেখ, শুক্রবার স্কুলে আমার লাস্ট ডে,এরপর আমরা সবাই যার যার পথে চলে যাব।

আমি তোমাকে শুক্রবার পর্যন্ত আসার সময় নিয়ে আসবো,যাবার সময় দিয়ে যাব ঠিক আছে?তারপর আর নেহার ছায়াও তোমাকে স্পর্শ করতে পারবে না।

শাহনাজঃহাহাহাহা...তু্মি না,...,তুমি আস্ত একটা.....থাক বাদ দেও।

আমিঃ থেমে গেলে কেন?বল আমি আস্ত একটা কি?

শাহনাজঃ না,বলব না। শুন, জীবন চলার পথে এইরকম অনেক নেহা এবং আরও কঠিন পরিস্হিতির সম্মুখীন হতে পারি। বেচে থাকতে হলে বুকে সাহস রেখে পরিস্হিতির মোকাবিলা করতে হবে।তুমি তো আর সব সময় আমার পাশে ছায়া হয়ে থাকবে না!!!আর অন্ধকারে তো মানুষের নিজের ছায়াই সাথ ছেড়ে দেয়।থ্যাঙ্কস অ্যাগেইন।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে বাবা, তোমার লেকচ্যার একটু থামো,আর আমার সাথে চল কাওছার আর রব্বানীর সাথে একটু দেখা করে আসি।

শাহনাজঃ ঐ দেখ গেইটের সামনে কাওছার ভাই আর পান্না দাঁড়িয়ে আছে,আর প্লে-গ্রাউন্ডে রব্বানী ফুটবল খেলতেছে।সম্ভবতঃ কাওছার ভাই তোমাকেই খুঁজছে।

আমিঃ ওহ সিট...আজও ভুলে গেছি। তুমি ঠিক বলেছ,কাওছার আমার জন্যই অপেক্ষা করছে। তুমি ওদের একটু ডাক না প্লিজ!

শাহনাজঃ এত দূর থেকে আমি ডাকবো! ওয়াহ রে আমার বীর পুরুষ'সরি'

আমিঃ ঠিক আছে,ঠিক আছে,আমিই ডাকছি। কাওছাররররররররররররর...

কাওছার আমার ডাক শুনে দৌড়ে কাছে এসেই...

কাওছারঃ শালা তুমি এখানে ফুটুসফাটুস করতেছ আর আমি সারা স্কুল খুঁইজা বেড়াইতেছি। কই দে,এনেছিস নাকি আজও ভুলে গেছিস?শাহনাজ ডোন্ট মাইন্ড সিস...

আমিঃ আগে আমার কথা শোন...জানিস, আজ একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেছে!!!

কাওছারঃ শালা,তুই নিজেই একটা অপ্রীতিকর জন্তু।তা কি হয়েছে তাড়াতাড়ি বল।

আমি কাওছারকে সব খুলে বলার পর সে বলে ভালো করেছে শাহনাজ।ঐ বদজাত মেয়েটা উচিত শিক্ষা পেয়েছে। তোকেও দুইটা দেওয়ার দরকার ছিল।

আমিঃ আমাকে দুইটা না,অনেকটা দিয়েছে আঁচড়কাম,এই দেখ শালা,এখনো রক্ত লেগে আছে।

কাওছারঃ আমি খুশি হইছি। তো তোমরা কি লাঞ্চ পরে ক্লাসে যাচ্ছ? আমরা যাচ্ছিনা।শুন,আমি যদি ছুটির আগে স্কুলে না আসি, তুই শাহনাজকে বাসায় পৌঁছিয়ে তার পর যাবে।

আমিঃ শাহনাজ বলছে ওর ভাল্লাগছে না,তাই এখন ভাসায় চলে যাবে। আমি বলছিলাম চল আমি এগিয়ে দিয়ে আসি। কিন্তু মিস বারুদ জানিয়েছেন,উনি একা যাবেন।

কাওছারঃ শালা তুই আস্ত একটা হাগাটালু,ও বলল আর তুই মেনে নিলে।এক কাজ কর,রব্বানীকে ডাক আর তুইও আজ ক্লাসে যাবে না,আমাদের সাথে চল।শাহনাজকে বাসায় পৌছিয়ে তারপর এক জায়গায় যাব। শালা আর মাত্র তিনদিন আছি, চল কিছু মজা করে আসি।

পান্নাঃ শাহনাজ,তুমিও চাইলে আমাদের সাথে আসতে পার। যাইবা?রব্বানী গেলে দ্বীপাও যাবে নিশ্চিত।

শাহনাজঃ হুমমম...আচ্ছা ঠিক আছে,আমিও তোমাদের সাথে যাব।

তারপর আমরা লেইকের পাড়ে চলে যাই। খুব সুন্দর জায়গা।এর আগে কোন দিন আমি আর শাহনাজ ক্লাস ফাঁকি দেই নাই।ওদের সাথে না গেলে এই জায়গাটা হয়তো অজানাই রয়ে যেত।

যাক,আমরা সবাই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছি।কার কি স্বপ্ন,কে কি হতে চাই বা করতে চাই এইসব।কিন্তু শাহনাজ চুপ চাপ বসে আছে।একপর্যায়ে পান্না শাহনাজকে জিজ্ঞেস করে,কি ব্যাপার তুমি কিছুই বলছ না যে? উত্তরে......

শাহনাজঃ আমি আর কি বলবো। যার বর্তমানের কোন নিশ্চয়তা নেই,তার আবার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা? ভাগ্য যার সতিনকাঁটা হয়ে আছে সে আর কি করতে পারে?

শাহনাজের মুখ থেকে এই ধরনের কথা শুনে সবাই দীর্ঘশ্বাস ফেলে অবাক হয়ে আছি।

আমার খুব কষ্ট হচ্ছে শাহনাজের জন্য,জানতে ইচ্ছে করছে শাহনাজের কষ্টের কথা।কিন্তু...

No comments:

Post a Comment