বিলাত ফেরত এক ধনী পরিবারের মেয়ে।
তোতা মিয়া ময়নার কাছে চিঠি লিখছে...
ও আমার ময়না,ময়না গো
মনে আছে,মনে আছে তোমার সেই চাঁদনী রাত,
যে দিন প্রথম তুমি রেখেছিলে আমার হাতে হাত।
আমি একা বসে চাঁদ দেখছিলাম তোমাদের পুকুর ঘাঁটে,
তুমি সবার চোখে ফাকি দিয়ে উদাসিনীর মত এসেছিলে ছুটে।
মনে আছে,তোমার বোনের বিয়ে ছিল,তুমি রাঙ্গিয়ে ছিলে হাত মেহদিতে,
তুমি বলেছিলে তোমার হাতে আমার নামের প্রথম অক্ষরটা লিখে দিতে।
আমি বলেছিলাম তা সম্ভব না কিছুতে,
দেখিনাই কখনো আকাশ জমিন মিলিতে।
তুমি বলেছিলে,তোমার জীবন যৌবন সব দিতে চাও আমাকে সঁপে,
আমি বলেছিলাম তা হয়না,এই সব ভাবতেই আমার পরান কাঁপে।
মনে আছে,তুমি বলেছিলে ভালবাসা বুঝেনা ধনী গরিব, মানে না জাতপাত,
আমি বলেছিলাম গরিবের ছেলে আমি, বামন হয়ে পারব না বারাতে চাদের পানে হাত।
অভাবের সংসার,সকালে খাইলে,বিকালে খাইবার থাকেনা ভরসা,
তুমি বলেছিলে চাইনা আমি বিলাসিতা,চাই শুধু তোমার ভালবাসা।
আমি বলেছিলাম তুমি বিলাত ফেরত মেয়ে,আর আমি গ্রামের চাষার ছেলে ,
তুমি বলেছিলে, আমি আর বিলাত ফিরত যাবনা তোমার বুকে টাই পেলে।
আমি বলেছিলাম আমার A/C ওয়ালা গাড়ি,হাই-ফাই বাড়ি এসব কিছুই নাই,
তুমি বলেছিলে,তোমার অনুরাগের পরশে দেহ মন শীতল করব তোতা ভাই।
আমি বলেছিলাম নামি দামি,শারী,চুড়ি, গয়না এইসব দেবার সাধ্য আমার নাই,
তুমি বলেছিলে,নামি দামি শাড়ী চুড়ি গয়না এই সব আমি কিছুই নাহি চাই।
আমি বলেছিলাম ব্রান্ডিড প্রসাধনী,লিপিষ্টীক ইত্যাদি দেবার ও যে ক্ষমতা নেই আমার,
তুমি বলেছিলে,আমার প্রণয়ের সৌরভে সুবাসিত হয়ে,প্রেম রঙ্গে রাঙ্গাবে অধর তোমার।
তুমি আরো বলেছিলে,বিদ্যুতের নয়,চাদের আলয় আলোকিত হবে মোদের ঘর,
দর্পণে নয়,তোমার নয়নে আমার চেহারা দেখব, দীপ্তিমান হবে মোর অন্তর।
আজ তুমি কই আর আমি কই?কোথায় গেল তোমার ভালবাসা?
আমি গরিবের ছেলেকে ভালবাসার স্বপ্ন দেখিয়ে কেন করলে নইরাশা?
আমার মামা অসুস্ত খবর শুনে আমি চলে যাই মামার বাড়ি,
দুই সপ্তাহ পর এসে শুনি তুমি তোমার নামের মত লন্ডন গেছ উড়ি।
দিন গেল,সপ্তাহ গেল,মাষ গেল,গুনতে গুনতে বছর গেল পুরি,
নাই জানি ঠিকানা,না আছে ফোন,তোমার ভাবনায় আমি মরি।
লোক মুখে শুনতে পাই তুমি নাকি, খালাত ভাইয়ের সাথে কবুল গেছ পড়ি,
এক অসহায় জিয়ন্ত লাশ হয়ে ভাবনার সাগরে ডুবে আছি,করি তো কি করি?
আমি বানানে খুব কাচা,তাই ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
No comments:
Post a Comment